
বিশেষ প্রতিবেদক:
কুতুবদিয়ায় ইয়াবাসহ চায়ের দোকানি শীর্ষ মাদক কারবারী আবু জাফর প্রকাশ জুনাইয়া কে গত বৃহস্পতিবার রাতে কুতুবদিয়া থানা পুলিশ আটক করলেও এখনো বহাল তবিয়তে মাদক কারবার নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে তার স্ত্রী রিনা আকতার এবং তার দুই সহোদর আবু তৈয়ব ও আবু ছৈয়দ।
আটক চা দোকানদার জুনাইয়া বড়ঘোপ ইউনিয়নের দক্ষিণ অমজাখালী এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
সুত্রে জানা গেছে, জুনাইয়ার আরো দুই ভাই আবু তৈয়বও চায়ের দোকানের আড়ালে মদ,গাঁজা ও বাংলা মদের ব্যবসা করে। আরেক ভাই আবু ছৈয়দও একই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ব্যবসাকে বৈধ করতে ইয়াবার টাকায় সাগরে মাছ ধরার নৌকা নামায় আবু ছৈয়দ। জামিনে বারবার বের হয়ে ফের একই ব্যবসা চালিয়ে যায় জুনাইয়া। তিন ভাইয়ের ব্যবসা দেখভাল করে শীর্ষ মাদক কারবারী জুনাইয়ার স্ত্রী রিনা আকতার। তার বিরুদ্ধেও দুটি মাদক মামলা রয়েছে।
সুত্রটি আরো জানায়, এক যুগ ধরে জুনাইয়া ও তার পরিবার মাদক বিক্রি করে আসছে, যা ওপেন-সিক্রেট এবং এলাকাবাসী থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসন সহ সকলে জানে। তার বাসায় মাদক সেবনের আসর বসে নিয়মিত। তার নেতৃত্বে রয়েছে মাদক বিক্রির একটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটে রয়েছে তার স্ত্রী রিনা আকতার, ভাই আবু তৈয়ব ও আবু ছৈয়দসহ ১২/১৫ জনের একটি গ্রুপ। পুলিশের অভিযানের খবরে তারা পালিয়ে গেলেও পুলিশের কৌশুলী অভিযানে আটক হয় শীর্ষ মাদক কারবারী জুনাইয়া।
এলাকাবাসী জানায়, চায়ের দোকানের আড়ালে তারা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে জুনাইয়া ও তার পরিবার। মাদক কারবার করে বিপুল টাকার মালিক বনে গেছে তারা। তারা এলাকায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা দাবী করে কায়েম করেছে সন্ত্রাস ও মাদকের রাম রাজত্ব। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস নেই কারো। প্রতিবাদ করলে তাদের ও বাহিনীর মারধরের শিকার হতে হয়।
এলাকাবাসী আরো জানায়, মাদক ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালিয়ে নিতে মাসিক মাসোহারা দিয়ে তৈরি করেছে সহযোগী ও প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। পুলিশের অভিযান, মামলা ও বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচতে বারবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকে ব্যবহার করে আসছে তারা। তাদেরকে সহযোগী সেই সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে রাখতে থানা পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।
থানা সুত্রে জানা যায়, আবু জাফর প্রকাশ জুনাইয়ার বিরুদ্ধে থানায় ৬ টি মাদক মামলা হয়েছে। তন্মধ্যে মামলা নং-৩/৩২,২/৩৬,১১/১৭, ১৩/৫৯,১২/৫৭,৩/৮০ অন্যতম। যার সবগুলোই সংশ্লিষ্ট ধারায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা বলে জানা গেছে। সেই সাথে জুনাইয়ার স্ত্রী রিনা আকতারের বিরুদ্ধেও থানায় দুটি মাদক মামলা রয়েছে।
কুতুবদিয়া থানার নবাগত ওসি একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, মাদক ব্যবসায়ী যতই শক্তিশালী হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কুতুবদিয়াবাসিকে একটি ম্যাসেজ দিতে চাই- সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ডাকাত, জলদস্যুদের আটক করতে মাননীয় পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন স্যারের নির্দেশে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করবো। এতে কুতুবদিয়ার সকল মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।
ওসি আরো জানান, আটক জাফর আলম প্রকাশ জুনাইয়ার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অনেক অভিযোগ। ইতোপূর্বে তার ও তার পরিবারের মাদকের ব্যবসা বন্ধ করতে হস্তক্ষেপ কামনা করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও কুতুবদিয়া থানা ওসি বরাবর গণস্বাক্ষর দায়ের করেছে এলাকাবাসী। তার বিরুদ্ধে অর্ধ-ডজন মাদক মামলাও রয়েছে থানায়। প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে। কোন মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধী চক্রকে নিশ্চিহ্ন করতে ব্যাপক গণসচেতনতার পাশাপাশি এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।